শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৭ অপরাহ্ন
তরফ স্পোর্টস ডেস্ক : আশা ছিল পয়েন্ট নিয়ে বাছাই শেষ করার। তা পূরণ হয়নি। বরাবরের মতো রক্ষণাত্মক খেলা বাংলাদেশ গোল হজম করল প্রথমার্ধে। দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুটি। শেষটাতেও হারের বিষাদ সঙ্গী হলো জেমি ডের দলের।
কাতারের দোহায় জসিম বিন হামাদ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার যথারীতি আধিপত্য করে আগের ম্যাচের একাদশে ৯ পরিবর্তন এনে খেলতে নামা ওমান। প্রত্যাশিতভাবেই ২০২২ বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের ম্যাচটি তারা জেতে ৩-০ গোলে। প্রথম লেগে ওমানের কাছে ৪-১ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ।
আট ম্যাচের ছয়টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। দুই ড্রয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে ‘ই’ গ্রুপের তলানিতে থেকে বাছাই শেষ করল তারা।
এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের পরের ধাপে খেলতে হলে দলকে পেরুতে হবে প্লে-অফের বৈতরণী। ২০১৮ বিশ্বকাপ ও ২০১৯ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে যেটি পেরুতে ব্যর্থ হয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার ভুটানের কাছে হেরে ১৬ মাসের জন্য আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে গিয়েছিল নির্বাসনে।
চোট ও কার্ডের কারণে সোহেল রানা, জামাল ভূইয়া, মাশুক মিয়া জনি, রহমত মিয়ার অনুপস্থিতে দলের অবস্থা শুরু থেকেই ছিল নড়বড়ে। একের পর এক আক্রমণে, কর্নারে তপু বর্মন, ইয়াসিন আরাফাত, রিমন হোসেন ও রিয়াদুল হাসান রাফিকে নিয়ে গড়া রক্ষণ কাঁপিয়ে দিতে থাকে ওমান।
সপ্তমদশ মিনিটে আনিসুর রহমান জিকো ফিস্ট করে কর্নার ফেরানোর পর খালিদ নাসেরের বাইসাইকেল কিকও ফেরান। পরের মিনিটেই কর্নারে আমজাদ আল হার্থির হেড গোললাইন থেকে হেডেই ফেরান মোহাম্মদ ইব্রাহিম।
২২তম মিনিটে গোছালো আক্রমণে এগিয়ে যায় ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ১০৪ ধাপ এগিয়ে থাকা ওমান। সতীর্থের থ্রু বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে খালিদ আল হাজরির বাড়ানো আড়াআড়ি ক্রস গোলমুখে পেয়ে টোকায় জিকোকে পরাস্ত করেন মোহাম্মদ আল গাফরি।
বাছাইয়ের ‘কাতার পর্বে’ তিন ম্যাচের মধ্যে এই প্রথম প্রথমার্ধে গোল হজম করল বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১-১ ড্র ম্যাচে এগিয়ে থেকে বিরতিতে গিয়েছিল দল। ভারতের কাছে ২-০ ব্যবধানে হেরে যাওয়া ম্যাচে দুটি গোলই খেয়েছিল দ্বিতীয়ার্ধে।
ছয় মিনিট পর প্রথম ও সেরা সুযোগটি নষ্ট হয় বাছাইয়ে জয়হীন বাংলাদেশের। মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর কর্নারে ইয়াসিন আরাফাতের হেড কর্নারের বিনিময়ে ফেরান গোলরক্ষক।
প্রথমার্ধের শেষ দিক ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারত ওমান। আহমেদ আল কাবিরের দুরূহ কোণ থেকে নেওয়া শট রাফির বুক ছুঁয়ে দূরের পোস্ট লেগে ফিরে।
৫৬তম মিনিটে সতীর্থের লম্বা পাস অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিলেন জামিল আল ইয়াহামদি। ওমানের এই মিডফিল্ডারকে আটকাতে জিকো পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে পথ আগলে দাঁড়িয়েছিলেন। ইয়াহামদির শট দূরের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে যায়।
জামালের অনুপস্থিতিতে রক্ষণ থেকে কাজী তারিক রায়হানকে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের ভূমিকায় খেলান জেমি। কিন্তু মানিক হোসেন মোল্লার সঙ্গে মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেননি ফিনল্যান্ড প্রবাসী এই খেলোয়াড়।
৬০তম মিনিটে সতীর্থের কাটব্যাক একজনের পা হয়ে পাওয়ার পর ডি-বক্সে ফাঁকায় থাকা আল হাজরি নিখুঁত শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।
একটু পর পোস্টে লেগে ফেরে এই ফরোয়ার্ডের আরেকটি প্রচেষ্টা। ৭৩তম মিনিটে খালিদ আল হাজরির শট আটকান জিকো।
৮০তম মিনিটের গোলে ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে যায় বাংলাদেশ। আব্দুল আজিজের পাস ধরে সুলাইমান আল আকবারি ছোট করে বাড়ান আল হাজরিকে। আগে জিকো পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ায় অনায়াসে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন এই ফরোয়ার্ড।
৮ ম্যাচে ৭ জয় ও এক ড্রয়ে ২২ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে শীর্ষে থেকে বাছাই শেষ করল আসছে বিশ্বকাপের স্বাগতিক কাতার। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় ওমান। ৭ পয়েন্ট নিয়ে ভারত তৃতীয় ও ৬ পয়েন্ট নিয়ে আফগানিস্তান চতুর্থ হয়েছে।